價格:免費
更新日期:2019-03-15
檔案大小:6.0M
目前版本:1.0
版本需求:Android 4.1 以上版本
官方網站:https://anantoslab.business.site
Email:anantozaman0@gmail.com
ধরো মারো খাওঃ এই প্রোজেক্ট এ আমরা রান্নার বিষয়ে সকল প্রকার তথ্য দিবো যেন আপনারা আরও বেশি বেশি রান্না করে পরিবারের সকলকে খাওয়াতে পারেন।
“এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি”, ঠিক তেমনি বলা যায়, এমন মজাদার রান্নাও কোথায় খুঁজে পাবে নাকো তুমি। হ্যাঁ আমি বাংলাদেশের খাবারের কথা বলছি। বাঙালিরা বিশ্বের যে দেশেই বসবাস করুক না কেন, নিজের দেশের খাবারের স্বাদ তাদের কাছে অমৃত সমান। আর তাইতো কানাডায় -৩৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় বরফের মধ্যে বসে প্রায় প্রতিটি বাঙালির বাড়িতে খিচুড়ি আর মাংসের হাড়ি চড়ে। বোস্টন থেকে বন্ধু ছবি পাঠালো বাইরে তুষারপাত হচ্ছে, অফিস ছুটি ঘোষণা করেছে, আর ওরা এই সুযোগে রেঁধে ফেলেছে সোনামুগের ডালের খিচুড়ি, ডিম ভাজি, বেগুন ভাজি, আলু কপি ভাজি আর সাথে বিক্রমপুরের গাওয়া ঘি। ওর ভাষায়, বিদেশে থাকি ঠিকই কিন্তু মনটা দেশি খাবার ছাড়া শান্তি পায় নারে বন্ধু।
বৃষ্টির দিনে লন্ডনে থাকা বাঙালি পরিবারে পাওয়া যাবে গরম গরম ইলিশ ও বেগুন ভাজার গন্ধ। আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা জানি, যেখানে বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীরা ছুটির দিনে একসাথে হয়ে চাঁদা দিয়ে গরুর মাংস ভুনা, খিচুড়ি, মাছের ঝোল বা মুড়ো ঘণ্ট বা কলিজা ভুনা রান্না করে খায়। কারণ সপ্তাহে অন্তত একদিন দেশের রান্না না খেলে তাদের সপ্তাহটাই ভেস্তে যায়।
এক ইতালীয় মেয়েকে চিনি, যে শুধু বাংলাদেশি রান্নার গুণে প্রেমে পড়ে গিয়েছিল সালেহীনের। কারণ সালেহীন খুব মজাদার সব বাংলাদেশি রান্না জানতো। বাংলাদেশের টেকশ্যাভি ছেলে কামাল প্রতিবছর জার্মানি থেকে দেশে আসে, শুধু মায়ের হাতে চ্যাপা শুটকির ভর্তা খেতে। খেয়েই ক্ষান্ত হয় না কামাল, যাওয়ার সময় খুব গোপনে, নানা কায়দায় ব্যাগে ভরে এতটাই নিয়ে যায়, যেন আরও মাসখানেক এই শুটকি দিয়ে ভাত খেতে পারে। কামাল বলেছিল ও নাকি অনেক দেশের খাবার খেয়েছে। কিন্তু শুটকির উপর কোন খাওয়া নেই। ওর ভাষায়, “উহু… আমি স্বর্গে গেলেও শুটকি আর ভাত চাই।”ফেসবুক খুললেই দেখা যায় পৃথিবীর আনাচে-কানাচে থাকা বাংলাদেশিরা বিভিন্ন সময় দেশি খাবার রান্না করছে আর ছবি আপলোড করছে। বরিশালের ছেলে মিল্টন, ঢাকায় থাকার সময়, শত রকমের মাছ খাওয়ার জন্যই ওর বাড়িতে আমরা খেতে যেতাম। সেই মিল্টন কানাডা প্রবাসী হয়েও অবিরত মাছের কথাই বলে যায়, মাছের স্বপ্ন এঁকে যায়। প্রতিটি বাংলাদেশি বিদেশ যাওয়ার সময় যে বইটি সাথে নিয়ে যাওয়া “ম্যান্ডেটরি” বলে মনে করে, সেটা হল সিদ্দিকা কবীরের রান্নার বই।
আমি নিজেকে দেশি রান্নার চরম ভক্ত মনে করি। যে দেশেই যাই, যা কিছুই খাই কিন্তু দু-চারদিন পরই বাংলা খাবারের জন্য মন কেঁদে ওঠে। কিন্তু কেন এমনটা হয়? কী যাদু এই বাংলা খাবারে? নাকি শুধুই আমরা অভ্যস্ত বলে এমনটা হয়।
অভ্যস্ততা তো আছেই কিন্তু এর উপরে আছে বাংলাদেশি রান্নার যাদু। বাংলাদেশি খাবারের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে এই খাবারের বৈচিত্র্য। কত ধরণের খাবার যে বাংলাদেশি মেন্যুতে আছে তা কল্পনাও করা যায় না। এদের স্বাদ একটার চেয়ে আরেকটা বেশি। বাংলার চিরায়ত সাদা ভাতের সাথে খেতে পারেন অন্তত ১০০ রকমের মিষ্টি পানির মাছ, আরও আছে সমুদ্রের মাছ, শতরকমের ভর্তা, ভাজি, সবজির নানা পদ, আলু ভাজি, বেগুন ভাজি, শুক্তো, বড়ি, কলার মোচা, অনেক রকমের শুটকি, নানা পদের ডাল, আচার, গরু, খাসি, মুরগি, হাঁসের মাংস রান্না এবং আরো কত কি। এই খাবারগুলোর মধ্যে কোনটাতে তেল-মশলার ব্যবহার বেশি, কোনটায় হালকা। যে যার পছন্দমত রাঁধে। বাংলার পিঠে-পুলিরও কোনো শেষ নেই। কত ধরণের পিঠা যে বানানো হয় শীতের মৌসুমে। আছে পায়েস, জর্দা, হালুয়া, দইসহ আরও কত কি।আছে মোগলাই খানা পোলাও-কোর্মা, রোস্ট, রেজালা, মাছ-মাংসের কালিয়া, কোপ্তা-কাবাব, চিংড়ির মালাইকারি, ডিমের কোর্মা, মোরগ পোলাও, কাচ্চি বিরিয়ানি, তেহারি, বোরহানি। আছে বাঙালির খাবার খিচুড়ি-মাংস-ডিম ভাজি এবং সাথে ঘি বা আচার। এত ধরনের আচার আর কোন দেশে বানায় কিনা আমার জানা নেই।
এছাড়াও আছে রুটি, পরোটা, নান, বাকরখানি, হরেক রকমের কাবাব, হালুয়া, মিষ্টি, বিভিন্ন ধরণের শরবত। বাংলাদেশের পথের ধারের ছোট ছোট দোকানে যে সিংগারা, সমুচা, ডালপুরি, আলুপুরি, ঝালমুড়ি, মোগলাই পরোটা, আলুর চপ, বেগুনি, ছোলা, হালিম, জিলাপি বিক্রি হচ্ছে। এসবের স্বাদও অসাধারণ। যারা একবার এসবের স্বাদ পেয়েছে, তারা আর কোনদিনও সেই স্বাদ ভুলবে না। বাংলাদেশে নিযুক্ত একজন ব্রিটিশ কর্মকর্তা তার বিদায়ী ভাষণে বলেছিলেন, বাংলাদেশে উনি আবার ফিরে আসবেন শুধু এদেশের অপূর্ব রান্না খাওয়ার জন্য। বিশেষ করে সিংগারার কথা উনি কখনও ভুলতে পারবেন না।